আমি ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। ৫ এপ্রিল ১৯৮৭ সালে বাংলাদেশের একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করি। রাজধানী ঢাকায় আমার বেড়ে ওঠা। স্কলাস্টিকা স্কুল থেকে ‘ও’ লেভেল এবং ‘এ’ লেভেল শেষে আমি উচ্চশিক্ষার জন্য ইউনিভার্সিটি অব হার্টফোর্ডশায়ারে (যুক্তরাজ্য) চলে যাই। সেখানে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে আন্ডার গ্র্যাজুয়েশন, মাস্টার্স শেষ করে বাংলাদেশে ফিরে আসি। ২০১১ সালে স্নাতকোত্তর শেষ হওয়ার পরে পারিবারিক ব্যবসায় জড়িত হওয়ার জন্য ২০১৫ সালে ঢাকায় প্রত্যাবর্তন অবধি অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য কয়েকটি স্থানীয় মোটরগাড়ি সংস্থায় কাজ করেছি।
অবশ্যই দেশের বাইরে ক্যারিয়ার গড়ে তোলার সুযোগ ছিল। ছোটবেলা থেকেই আমি একটি রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে বড় হয়েছি। এটা আমার উপলব্ধি যে, দেশপ্রেম ছাড়া সুষ্ঠু রাজনীতি অসম্ভব। আমার বাবা ছিলেন একজন মুক্তিযোদ্ধা, বাংলাদেশের একজন রাজনীতিবিদ, সাবেক মন্ত্রী এবং বাংলাদেশের রাজধানী অবিভক্ত ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সর্বশেষ মেয়র। তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সহ-সভাপতি ছিলেন এবং অবিভক্ত ঢাকার শহর বিএনপির সভাপতি ছিলেন দীর্ঘদিন। তবে আমার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা। সেটিই আমার কাছে সবচেয়ে বড় পরিচয়। আমার পরিবারের কথা চিন্তা করে এবং গভীর দেশপ্রেম থেকেই আমি দেশে ফিরে এসেছি। রাজনীতি করব, এমন চিন্তা হয়তো শুরুতে করিনি। কিন্তু পরে পরিবার ও বাবার নির্দেশে, পাশাপাশি দলে যারা সিনিয়র রয়েছেন তাদের পরামর্শে আমি মানুষের পাশে থাকার তীব্র বাসনা থেকেই রাজনীতি শুরু করেছি। অনেকে বলে আমি তরুণ। হ্যাঁ তরুণ ঠিকই, কিন্তু আমার বয়স যখন চার বছর তখনই দেখেছি আমার বাবা মন্ত্রী। এরপর বড় হয়ে আমার বাবার নির্বাচনী সব ক্যাম্পেইনে অংশ নিয়েছি। রাজনীতি আসলে তখন থেকেই বুঝতে শিখেছি।
আমি প্রতিনিয়তই শিখছি, ইতিহাস বুঝে রাজনীতির চর্চা করছি। আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি প্রায় ৫০ বছর। কিন্তু কোথায় আছি আমরা? মুক্তিযুদ্ধের সূত্রপাত হয়েছিল গণতন্ত্র হরণ করার প্রচেষ্টা রুখে দেয়ার বাসনা থেকে। কিন্তু আজ এত বছর পরেও দেশে কার্যকর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়নি। বাহ্যিক অনেক উন্নয়ন, কিছু প্রজেক্ট, রাস্তা-ঘাট হয়তো চোখে পড়ছে, কিন্তু এগুলো আসলে সার্বিক উন্নয়ন নয়। আমরা আরো উচ্চতায় যেতে পারতাম। আমি মনে করি, রাজনৈতিক নেতৃত্বে গুণগত পরিবর্তন প্রয়োজন। গণতান্ত্রিক যে প্রতিষ্ঠানগুলো রয়েছে, সেগুলো যদি আরো শক্তিশালী হয়, সংসদ যদি কার্যকর থাকে, বিচার বিভাগ যদি সত্যিকার অর্থেই স্বাধীন হয় এবং প্রশাসন যদি রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে মিলেমিশে একাকার না হয়ে যায় তাহলে পরিবর্তন আসতে বেশি সময়ের প্রয়োজন হবে না।