মিডিয়া কাভারেজরাজধানী ঢাকায় ডেঙ্গু ও মশক নিধনে ব্যর্থতা এবং করণীয়

December 23, 2019by farjul0

স্বাস্থ্য পরিসেবা অধিদফতরের মতে, ১ আগস্ট ২০১৯ পর্যন্ত ৮ মাসে ডেঙ্গু রোগে ১৪ জন মারা গেছেন এবং ১৯,৫১৩ জন আক্রান্ত হয়। যার বেশিরভাগই শিশু। যদিও অন্য উৎসগুলি মৃতের সংখ্যা ৫০ পেরিয়ে গেছে। ২০১৯ সালের ১ আগস্ট ডিজিএইচএস দেশের সব জেলায় এই রোগের ছড়িয়ে পড়েছে বলে নিশ্চিত করে। তবে ঢাকায় এর প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে বেশি।

ব্যর্থতা:
১. মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য যে ওষুধ ব্যবহার করার কথা তা ঠিকমতো ও নিয়মিত করা হয় না।
২. ওষুধের গুণগত মান ঠিক থাকে না।
৩. যেভাবে ও যেসব জায়গায় ওষুধ ছিটানোর কথা তা করা হয় না।
৪. পর্যাপ্ত পরিমাণে ওষুধ ব্যবহার করা হয় না।
৫. মশার ওষুধ কেনা ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে সীমাহীন দুর্নীতি। সিটি করপোরেশনের মশক নিধন কার্যক্রমের জন্যে বরাদ্দকৃত অর্থের সিংহভাগই হাতিয়ে নিচ্ছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র।
৬. দীর্ঘদিন ধরে একই ধরনের ওষধু ব্যবহার করা। এত মশার টিকে থাকার ক্ষমতা তৈরি হয়ে যায়।
৭. যেখানে-সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলা।
৮. উন্মুক্ত ড্রেনেজ সিস্টেম, ডোবা-নালার ক্ষেত্রে বড় রকমের অব্যবস্থাপনা।
৯. বদ্ধ খালগুলো পরিষ্কারের ব্যবস্থা না করা। ঢাকা শহরের ৫ শতাধিক জলাশয় মশাদের বড় প্রজনন ক্ষেত্র।
১০. জনসচেতনার অভাব।
১১. সরকারের উদাসীনতা ও দায়িত্ব পালনে গাফিলতি।
১২. সিটি কর্পোরেশনগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের অভাব।
১৩. সিটি কর্পোরেশনগুলোর মধ্যে জবাবদিহিতার অভাব।
১৪. কারিগরি ও লোকবলের সক্ষমতার অভাব।
১৫. ডেঙ্গু হলে দ্রুত ডাক্তার ও চিকিৎসার স্মরণাপন্ন না হওয়া। অর্থাৎ সমস্যাকে গুরুত্ব দিয়ে না দেখা।
১৬. হাসপাতাল বা ক্লিনিকগুলোর ইচ্ছামতো ও অত্যধিক চিকিৎসা খরচ নেয়া।
১৭. চিকিৎসা ব্যবস্থাকে নাগরিকের দোরগোড়ায় নেয়া হয় নি; করা হয় নি গণমুখী।
১৮. হাসাপতাল ও ক্লিনিকগুলোতে স্বল্প ধারণক্ষমতা।
১৯. রাজধানীর অধিকাংশ হাসপাতালেই ডেঙ্গু শনাক্তকরণের কার্যকর ব্যবস্থা নেই। ফলে টাইফয়েড ও ডেঙ্গুর পার্থক্য নির্ণয়ে প্রায়ই চিকিৎসকদের হিমশিম খেতে হয়।
২০. ডেঙ্গু সিজনের শুরুতেই (জুন থেকে অক্টোবর পর্যন্ত) সরকারের পক্ষ থেকে মশক নিধন ও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের প্রতি গুরুত্ব না দেয়া।

করণীয়:
যেকোনো সমস্যা চিহ্নিত করতে পারার মধ্যেই করণীয় নিহিত থাকে। অর্থাৎ কোনো বিষয়ে যেগুলো সমস্যা, সেগুলো নিরসন করলেই সমস্যার সমাধান আসে। ফলে রাজধানীর মশক নিধনের ক্ষেত্রে চিহ্নিত সমস্যাগুলোর সমাধান করলেই রাজধানীবাসী এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারে। এ ক্ষেত্রে যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে তাহলো- মশক নিয়ন্ত্রণের বেলায় যে দুর্নীতি রয়েছে তাকে জিরো লেভেলে নামিয়ে আনা হবে। এছাড়া, চিহ্নিত সমস্যাগুলোর সমাধানে দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে। রাজধানীর মশক নিধন যেমন অগ্রাধিকার পাবে তেমনি ডেঙ্গু সমস্যার সমাধানে নেয়া হবে কার্যকর ব্যবস্থা। সমস্যাকে গুরুত্ব দিয়ে সমন্বয়ের মাধ্যম কাজে নামলে অবশ্যই এ সমস্যার সমাধান দ্রুত আসবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *